বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ২৪টি দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই নতুন এই ধরন শনাক্ত হয়েছে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, বতসোয়ানা, বেলজিয়াম, হংকং, ব্রিটেন, কানাডা, হংকং, ইসরায়েল ও ভারতে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
সাধারণ সর্দি-কাশি নাকি ওমিক্রন বুঝবেন কিভাবে ?
ওমিক্রনের আক্রান্তদের উপসর্গ গুলো সাধারণ ফ্লুর মত ।যেমন -
I. মাথা ব্যথা
II. গলা ব্যথা
III. নাক দিয়ে পানি পড়া
IV. শরীরে ব্যথা
V. হাঁচি-কাশি
VI. ক্লান্তি,
VII. গায়ে ব্যথা
যে কারণেই সকলে সাধারণ ফ্লু আর ওমিক্রনের উপসর্গগুলি গুলিয়ে ফেলছেন। কিন্তু এ ভাইরাস কিন্তু সাধারণ সর্দি-কাশি নয় । তাই একে হালকাভাবে নেওয়া চলবে না।
কাশি, মাথা ভার, নাক দিয়ে পানি পড়া, শরীরে ব্যথা ইত্যাদি হলো এই ভাইরাসের প্রধান কয়েকটি লক্ষণ। এছড়াও ওমিক্রনে আক্রান্তদের বমিভাব ও খিদে চলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকি গলার স্বরেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।
ওমিক্রন কি ডেল্টার মতোই ভয়ঙ্কর ?
ওমিক্রনের ভাইরাস খুব সংক্রামক।তবে আশার আলো হল ওমিক্রনের রোগ-লক্ষণ এখনও পর্যন্ত বিশেষ জটিল নয়। ওমিক্রনে এবারে মানুষ খুব বেশি যে কাহিল হয়ে পড়ছে তেমন নয়, কিন্তু শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের সংক্রমণ জনিত কোনও সমস্যা নেই।
ওমিক্রন থেকে তেমন বড় সমস্যা খুব কম ক্ষেত্রেই দেখা গেছে। তাই হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমছে। আক্সিজেন লাগে না, সঙ্কট নেই, হাসপাতালের প্রয়োজন কম। আক্রান্ত হার বেশী হলেও মৃত্যু হার কম ।
ওমিক্রন থেকে বাঁচতে যে নিয়ম মেনে চলবেন
ভিটামিন- সি যুক্ত খাবার
সবারই জানা আছে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ভিটামিন সি’যুক্ত খাবার কতটা জরুরি। কারণ এই ধরনের খাবার আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি রাখুন পাতে। লেবু, কমলা, আমলকিসহ টকজাতীয় ফলে থাকে ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি।
শরীরচর্চা ও ব্যায়াম
শরীর সুস্থ রাখতে যেমন শরীরচর্চার প্রয়োজন ঠিক তেমনই বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পেতেও তা চালিয়ে যেতে হবে। শরীরচর্চার মাধ্যমে ইমিউনিটি বাড়ে। জিমে, মাঠে যেখানে খুশি ব্যায়াম করুন। প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে চলাফেরা করুন। ব্যায়াম করতে সমস্যা হলে জগিং করুন বা হাঁটুন ৩০ মিনিট।
মাস্ক
শীতের এ সময় সবাই কমবেশি সর্দি-কাশিতে ভোগেন। কে সাধারণ সর্দি-কাশি আর এক ওমিক্রনে আক্রান্ত তা নিশ্চয়ই আপনি টের পাবেন না! তাই সুরক্ষিত থাকতে অন্তত মাস্ক পরুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা থেকে বাঁচতে হলে মাস্কই হলো প্রধান অস্ত্র। তাই সব সময় মাস্ক পরুন। বিশেষ করে ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই পরতে হবে।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার
করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমতেই অনেকেই ব্যক্তিগত সুরক্ষার বিষয়টি ভুলতে চলেছেন! যা ওমিক্রন সংক্রমণের কারণ হতে পারে। তাই নিয়মিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। সবচেয়ে ভালো হয় অন্তত ৩০ সেকেন্ড সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুলে। তবে যেহেতু এখন শীতের সময় তাই ঘন ঘন স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
শারীরিক দূরত্ব
ওমিক্রন সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অবশ্যই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। ঠিক যেমনটি করোনার শুরুর সময় থেকেই শারীরিক দূরত্ব রাখার কথা বলা হয়েছে। তাই বাজার, বাস, ট্রেনে কিংবা ভিড় এলাকায় চলাফেরার ক্ষেত্রে সাবধান থাকুন। যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন।
করোনার টিকা
করোনার টিকা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিতে হবে। টিকা রোগ আটকাতে না পারলেও রোগের ঘাতক রূপ থেকে বাঁচাতে পারে। তাই টিকা আবশ্যক।যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা বিশেষ সতর্ক থাকুন। যেমন- ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হৃদরোগ, কিডনির সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খান ও নিয়মমাফিক চলুন।
লিখেছেন – ইরোনা মৌমিতা
১০ জানুয়ারি , ২০২২
তথ্যসূত্র:
https://www.dhakatimes24.com
https://www.jagonews24.com
https://tv9bangla.com
https://www.bbc.com