কিন্তু অনেকেরই এই নেবুলাইজারের ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা নেই। তাই চলুন জেনে নেই নেবুলাইজারের সঠিক ব্যবহার পদ্ধতি, ভালো নেবুলাইজার চেনার উপায় ও যত্ন সম্পর্কে!
নেবুলাইজার কী?
নেবুলাইজার কোনো ওষুধ নয়, এটি ওষুধ প্রয়োগ করার একটি মেশিন।ওষুধ সরাসরি না খেয়ে ওষুধের মিশ্রণকে গ্যাসেরূপান্তর করে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়াই মূলত নেবুলাইজার মেশিনের কাজ।
বিভিন্ন ধরণের নেবুলাইজার মেশিন
বর্তমান সময়ে বাজারে তিন ধরণের নেবুলাইজার মেশিন পাওয়া যায়। এই তিন ধরণের মেশিনের ব্যবহারের ধরণ ও কাজ সম্পুর্ণ আলাদা।
১। জেট নেবুলাইজার মেশিনঃ বাসাবাড়িতে বা ফার্মেসিতে যে সকল নেবুলাইজার মেশিন পাওয়া যায় তা হল জেট নেবুলাইজার মেশিন । এ ধরণের মেশিন সহজে ব্যবহার যোগ্য বিধায় সকল জায়গায় ব্যবহার করা যায়।
২। আল্ট্রাসনিক নেবুলাইজার মেশিনঃ উচ্চ শব্দশক্তি বা আলট্রা সাউন্ড ব্যবহার করে তরল মেডিসিনকে শ্বসনালিতে পাঠানো হয় বলে এই ধরনের মেশিনকে আল্ট্রাসনিক নেবুলাইজার মেশিন বলে।
৩। মেশ নেবুলাইজার মেশিনঃ এই মেশিনের মেশের সাহায্যে তরল ওষুধকে সংকুচিত করে বায়ু বা অক্সিজেন দিয়ে অ্যারোসলে রূপান্তরিত করে শ্বাসনালিতে পাঠানো হয় বলে এই ধরণের মেশিন কে মেশ নেবুলাইজার বলে।
কোন রোগী নেবুলাইজার মেশিন ব্যাবহার করবে ?
যাদের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা আছে যেমন অ্যাজমা, সিওপিডি বা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি রোগ আছে তারাই নেবুলাইজার মেশিন ব্যবহার করে।
নেবুলাইজার মেশিন বনাম ইনহেলার
নেবুলাইজার এবং ইনহেলার উভয়ই দীর্ঘমেয়াদী ফুসফুসের রোগের ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।ইনহেলার আকারে ছোট তাই, বহন করা সুবিধাজনক। অন্যদিকে নেবুলাইজার আকারে অনেক বড় একটি মেশিন এবং এটি ব্যবহার করার জন্য বিদ্যুৎ এর প্রয়োজন হয়ে থাকে।
তবে, ছোট শিশুদের জন্য ইনহেলার ব্যবহার করা খুব কষ্টসাধ্য একটি বিষয়। তাই, ডাক্তাররা ছোট শিশুদের বেলায় ইনহেলার এর পরিবর্তে নেবুলাইজার ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
নেবুলাইজার মেশিনে কি কি থাকে?
নেবুলাইজার মেশিনে মূলত কমপ্রেসার, প্লাস্টিকের টিউব ও ওষুধ রাখার জন্য একটি চেম্বার থাকে। প্লাস্টিকের টিউবটি ও কমপ্রেসারটি ওষুধের চেম্বারে যুক্ত করা থাকে। কমপ্রেসারের মধ্যে চাপ প্রয়োগ করলে চেম্বারে বাতাসের সৃষ্টি করে। ফলে চেম্বারের তরল ওষুধটি অ্যারোসলে রূপান্তর করে।
নেবুলাইজার ব্যাবহারের নিয়মাবলি
১। রোগীকে আরামদায়ক ভাবে বসাতে হবে ।
২। মেশিনকে ভালো ভাবে সেট করে নিতে হবে। নির্দিষ্ট অনুপাতে ওষুধ মেশাতে হবে।
৩। কমপ্রেসারকে বিদ্যুতের সাথে সংযোগ দিতে হবে যাতে দ্রুত বাতাস সরবরাহ করতে পারে।
৪। তারপর আরোসল যুক্ত মাস্ক মুখে দিয়ে ঠোট বন্ধ করে ধীরে ধীরে লম্বা নিঃশ্বাস নিতে হবে।
নেবুলাইজার মেশিনের যত্ন ও ব্যবহারের কিছু সতর্কতা
১। ব্যবহারের আগে ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে ।
২। ব্যবহারের আগে ও পরে নেবুলাইজারের মাস্ক ও মেশিন গরম পানি দিয়ে ৩০ সেকেন্ডের কত ধুয়ে নিতে হবে।
৩। গরম পানি দিয়ে কমপ্রেসার ও মেশিনের টিউব ধৌত করা যাবে না।
৪। ৬ মাস পর পর মাস্ক বদলাতে হবে।
৫। ফিল্টারে ময়লা জমলে তা পরিবর্তন করা উচিৎ।
৬। নেবুলাইজার মেশিন নিয়মিত ব্যবহার করা ঠিক নয়।
ভালো নেবুলাইজার চেনার উপায়
বাজারেতো কতরকম নেবুলাইজার পাওয়া যায়। কোনটা ভালো হবে এটা নিয়ে আমাদের অনেকেরই কনফিউশন থাকে। নেবুলাইজার কেনার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত, চলুন জেনে নেই।
১) রিচার্জেবল এবং আকারে ছোট নেবুলাইজার সুবিধাজনক।
২) নেবুলাইজারের মেকানিজম, মেডিসিন নেবুলাইজেশনের রেট, পার্টিকেল সাইজ এগুলো চেক করে নেওয়াটা ভীষণ জরুরি।
৩) শব্দ কম হয় এবং ওষুধের অপচয় হয় না এমন নেবুলাইজার ব্যবহার করা ভালো।
এমন কিছু ভালো নেবুলাইজারের নাম হল-
1. Mesh Nebulizer Beurer IH-50 Portable
কিছু সতর্কতা মেনে চললে ও সঠিক ব্যবহারবিধি জানা থাকলে নেবুলাইজার আপনার দুঃসময়ের সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে।পোর্টেবল সাইজ, রিচার্জেবল, সহজে ব্যবহার করা যায় এমন একটি নেবুলাইজারের সন্ধান অনেকেই খোঁজেন। আপনার দরকারি এই পণ্যটি নিচের এই লিঙ্ক থেকে নিতে পারেন।
পেইজ লিংক- https://medicalstore.com.bd/
লিখেছেন – ইরোনা মৌমিতা
২৪ জানুয়ারি ,২০২২
তথ্যসূত্র: